প্রাচীন ৭ বিস্ময়

চলুন তাহলে আজকে আরেফিন লাইব্রেরির মাধ্যমে জেনে আসি পৃথিবীর ৭ টি বিস্ময় সম্পর্কে

ইনকা সভ্যতা
দক্ষিণ আমেরিকার ইনকা সভ্যতার রাজধানী কাসকোর বাইরের অংশে একটি দুর্গ রয়েছে যার নাম স্যাকসাহিউম্যান। পেরুর আন্দিজ পর্বতমালাতে রয়েছে এ স্থানটি। এটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে অসংখ্য পাথর। এ পাথরগুলো নিখুঁতভাবে কাটতে হয়েছে নির্মাতাদের। কিন্তু এ স্থাপনা প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। এত আগে সেখানে কিভাবে নিখুঁতভাবে এ স্থাপনা নির্মিত হয়েছে, এটি মানুষের নিকট এক বিস্ময়। অনেকেই ধারণা করেন এ স্থাপনাটি তৈরিতে ভিনগ্রহের অধিবাসীরা সহায়তা করেছেন। কারণ এর অনেক পাথরের ওজন ৩৬০ টন পর্যন্ত। আর এগুলো নির্মাণের জন্য ২০ মাইলেরও বেশি দূর থেকে নির্মাণস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে। এরপর নিখুঁতভাবে এগুলো স্থাপন করা হয়েছে দুর্গটিতে।

প্রাচীন ৭ বিস্ময় 2
পেরুর রাজধানী লিমা থেকে প্রায় ২০০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে এ স্থানটি অবস্থিত। এটি মূলত অত্যন্ত শুষ্ক একটি মালভূমি। আর এ মালভূমিতেই অঙ্কিত হয়েছে প্রায় আটশ দীর্ঘ রেখা। এগুলো এতই বড় যে আকাশ থেকে দেখলে সঠিকভাবে বোঝা যায়। আর এ রেখাগুলোর মাধ্যমে ৩০০টি গাণিতিক চিহ্ন ও ৭০টি প্রাণীর অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এতে রয়েছে মাকড়সা, বাঁদর ও পাখিরও অবয়ব।

এ অবয়বগুলোর কোনো কোনোটি কয়েক মাইল দীর্ঘ। এ অঙ্কনগুলো অবশ্য সাম্প্রতিক কোনো চিহ্ন নয়। গবেষকরা জানিয়েছেন এগুলো প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু কেন এ অবয়বগুলো অংকন করা হয়েছে তা মানুষের কাছে এক বিস্ময়। এত আগে এ ধরনের চিহ্ন আঁকার জন্য মানুষের হাতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ছিল না বলেই মনে করেন বহু গবেষক। ফলে তাদের ধারণা এটি ভিন্নগ্রহের অধিবাসীদের কীর্তি।

প্রাচীন ৭ বিস্ময় 4
মিশরের রাজধানী কায়রোর ঠিক বাইরে গিজা অঞ্চলে রয়েছে মিশরের সে আশ্চর্য পিরামিড। এটি তৈরি করা হয়েছে মরুভূমির মাঝে। সাড়ে চার হাজার বছর আগে পিরামিড নির্মিত হয়েছে। সে সময় ফারাও শাসকদের সমাধি হিসেবে ব্যবহৃত হয় পিরামিড। অনেকের কাছেই পিরামিডের নির্মাণ এক বিস্ময়কর বিষয়। কারণ সাড়ে চার হাজার বছর আগে এত বিপুল পাথর বহন করা প্রায় অসম্ভব ছিল। পিরামিডের পাথরগুলোর সর্বনিম্ন ওজন ছিল প্রায় দুই টন। আর কিভাবে এত বিশাল স্থাপনা নিপুণভাবে তৈরি করা হলো তা বিস্ময়কর। এ কারণে অনেকেই ধারণা করেন ভিনগ্রহের অধিবাসীদের সহায়তায় পিরামিড নির্মিত হয়েছে।

প্রাচীন ৭ বিস্ময় 6
ইংল্যান্ডের স্যালিসবারিতে বিশালাকার পাথরের এক বৃত্তাকার স্থাপনা রয়েছে। স্টোনহেঞ্জ নামে পরিচিত এ স্থানটিতে যে পাথরগুলো ব্যবহৃত হয়েছে তার কোনো কোনোটি ৫০ টন ওজনের। সুইস লেখক এরিখ ভন ড্যানিকেন জানিয়েছেন, স্টোনহেঞ্জ মূলত সৌরজগতের মডেল। এছাড়া এটি ভিনগ্রহের অধিবাসীদের অবতরণক্ষেত্রও হতে পারে। স্টোনহেঞ্জ নির্মাণের জন্য এ পাথরগুলো কয়েকশ মাইল দূর থেকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। আর এ কারণে বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। এছাড়া ঠিক কী কারণে এখানে পাথরগুলো বিন্যস্ত করা হয়েছে তাও অজানা। আর এ স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে।

প্রাচীন ৭ বিস্ময় 6
মেক্সিকো সিটিতে টেওটিহুয়াক্যান অবস্থিত। প্রাচীন এ পিরামিডের মতো স্থাপনাটি প্রায় দুই হাজার বছর আগে নির্মিত। টেওটিহুয়াক্যান শব্দের অর্থ দেবতাদের শহর। এ স্থাপনাটি মানুষ তৈরি করেছে। তবে এর আকার ও জটিল নির্মাণশৈলির কারণে বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর। কিন্তু কী কারণে প্রায় লাখখানেক মানুষ মিলে এত বড় স্থাপনা তৈরি করতে হবে, তা এখনও মানুষের নিকট বিস্ময়।

প্রাচীন ৭ বিস্ময় 10
ইস্টার আইল্যান্ড দ্বীপটি বিখ্যাত অতিকায় কিছু মূর্তির জন্য। দ্বীপটি চিলির প্রায় ২০০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো প্রায় ৯০০ মূর্তি রয়েছে এ দ্বীপে। মূর্তিগুলোর মাথা শুধু মাটির ওপরে, শরীরের বাকি অংশ মাটির নিচে। এই মূর্তিগুলির শরীরও যে মাটির নিচে লুকানো অবস্থায় আছে তা আর্কিওলজিস্ট বা পুরাতত্ত্ববিদরা প্রথম জেনেছেন ১০০ বছর আগে, ১৯১৪ সালে যখন প্রথম এই দ্বীপে পুরাতাত্ত্বিক গবেষণা শুরু হয়। কী কারণে এ মূর্তিগুলো নির্মিত হলো, কিভাবেই বা তা মাটির নিচে গেল এসব বিষয় এখনো রহস্য।

প্রাচীন ৭ বিস্ময় 12
মঙ্গলগ্রহে মানুষের মুখের মতো দেখতে একটি পাথরের সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৭৬ সালে। এটির ছবি তোলা হয় ভাইকিং ১ অরবিটারের সহায়তায়। কথিত এ ফেস অন মার্স’ প্রায় দুই মাইল দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট। মঙ্গলগ্রহের সাইডোনিয়া অঞ্চলে এটি অবস্থিত। ছবিটি পৃথিবীতে প্রচারিত হওয়ার পরই জনপ্রিয়তা পায়। গবেষকরা সে সময় জানিয়েছিলেন, এটি শুধুই পাথর ও ছায়া, যা কাকতালীয়ভাবে মানুষের মুখের অবয়ব প্রকাশ করেছে। তবে বিষয়টি মানুষের মাঝে জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে সে স্থানের আরও ছবি তোলা হয়। সেসব ছবিতে আর মুখের বিষয়টি পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টিকে এখনো বহু মানুষ রহস্যজনক ও ভিনগ্রহের অধিবাসীদের কীর্তি বলে মনে করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top