পৃথিবীতে এমন সব অদ্ভুত রহস্যের কথা আমরা প্রতিনিয়ত শুনি যেগুলোর কোনো কোনো ব্যাখা রুপকথাকেও হার মানায়। চলুন আজকে আরেফিন লাইব্রেরীর মাধ্যমে আমরা কিছু অদ্ভুত রহস্যময় স্থান সম্পর্কে জানি।
এই পর্বতমালা আমেরিকার ফিনিক্সে-এর পূর্ব দিকে অবস্থিত। আর নামেই বুঝা যাচ্ছে এই পর্বতের বৈশিষ্ট্য। স্থানীয় নাম Superstition Mountain। স্থানীয় ইতিহাসে ১৮০০ শতাব্দীতে জ্যাকব ওয়াল্ট্জ নামের এক লোক একটি অনেক বড় স্বর্নের খনি আবিস্কার করেন এই পর্বতমালায়। সে থেকে এই পর্বতের একটা নামকরন হয় Lost Dutchman’s Goldmine. সে তার মৃত্যশয্যা পর্যন্ত এই সোনাল খনির কথা গোপন রেখেছিল। এরপরে যখন এই ব্যাপারটা জানাজানি হয়েছিল তখন অনেক মানুষ ওখানে সোনার খনির সন্ধানে গিয়ে মারা পড়েছে। সে থেকে শোনা যায় এসব নিহত হওয়া মানুষদের আত্মা নাকি এখনও ঘুরে বেড়ায় এই পর্বত শ্রেনীতে। অনেকেই বলেন, এই সোনার খনিকে পাহাড়া দেয় Tuar – Tums নামের এক ধরনের প্রানী যারা বসবাস করে সেই পর্বতের নীচে থাকা অজস্র টানেলে। “এপাচি” গোত্রের লোকজনরা বলেন এই পাহাড়শ্রেনী নাকি দোযখের মূল দরজা।
Devil’s Sea বা শয়তানের সমুদ্র (Dragon’s Triangle) – শুনেছেন এর কথা? এর কাজ-কারবার অনেকটা বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের মত। জাপানের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত এই আজিব জায়গায় হাজার হাজার ঘটনা রেকর্ড করা হয় যার কোন ব্যাখ্যা নাই। এই জায়গায় জাহাজ, প্লেন এমনকি মানুষও নাকি হাওয়ায় গায়েব হয়ে গিয়েছে অনেকবার। জাপানিজ ফিশিং অথরিটি এই জায়গাকে বিপজ্জনক ঘোষনা করেছিল অনেক আগেই। ১৯৫২ সালে জাপানি সরকার ৩১ জন গবেষক সহ একটি জাহাজ পাঠিয়েছিল এই জায়গায় – আর বলাবাহুল্য সেই জাহাজ আর মানুষগুলোকে আর কখনো খুজে পাওয়া যায়নি। এই জায়গাকে সবাই “ভিনগ্রহবাসীর আস্তানা” বলে। আবার অনেকেই বলে আটলান্টিসের হারানো সভ্যতা।
সারা পৃথিবীতে ভূতের অসংখ্য গল্প রয়েছে। স্টিফেন কিং এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত The Shining হরর মুভি দেখলে বুঝা যায় । বইটি লেখার ক্ষেত্রে তাঁকে অনুপ্রানিত করেছিল স্ট্যানলি হোটেল যেটি কলোরাডোর এস্টেস পার্কে অবস্থিত। তিনি যখন এই হোটেলের ২১৭ নাম্বার রুমে অবস্থান করেন তখন নিজেই অনেক ভৌতিক ঘটনা দেখেন। তিনি শুনতে পেতেন ভূতের ছেলেরা পাশের রুমে খেলা করছে! অনেক আত্মা ওখানে ঘুরে বেড়াতো। যখন গেস্ট আসতো তারা দেখতে পেত পিয়ানোর কীগুলো নিজে নিজে মুভ হচ্ছে, মিউজিক বাজছে। এই সকল ভৌতিক ঘটনা যারা দেখতো তাদের জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশায়ারে অবস্থিত উডচেস্টার ম্যানশনটির ভৌতিক বাড়ি হিসেবে খ্যাতি আছে। দালানটির নির্মান কাজ শেষ হয়নি। গত ২০০ বছর আগে এটির কাজ করা হয়েছিল শেষ বারেব মত। গুজব আছে এখানে যারা কাজ করতে আসে তারা অনাক্ষাঙ্কিতভাবে মারা যায়। অদ্ভুত নাকের শব্দ পাওয়া যায়, নির্মান কাজের শব্দের মত শব্দ পাওয়া যায়।
এটি ৪৮০ একরের একটি প্রাইভেট প্রপার্টি। আমেরিকার ইউটাহ রাজ্যের উত্তরে। এই জায়গার নামে অসংখ্য রিপোটর্ আছে যে এখানে অনেক UFO যা ভিনগ্রহের যান, অদ্ভুত সব প্রানী আর সুপারন্যাচারাল সব ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। যদিও ১৯৫০ সাল থেকেই এই জায়গাতে সব আজীব ঘটনা ঘটতে শুরু করে, কিন্তু সবচেয়ে রহস্যময়ী ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৪ সালে। প্রথমদিন, যেদিন টেরি এবং গেইন এই জায়গায় মুভ করে কেনার পরে। ঐ দিন তারা এক বিশাল ভাল্লুক দেখতে পায়। প্রথমে তারা সেই ভাল্লুককে পোষ মানাতে চেয়েছিল দেখার পরে। কিন্তু ভাল্লুক মামা অনেক বেশী রাগী আর আক্রমনাত্মক ছিল। যখন টেরি তার বন্দুক দিয়ে ভাল্লুকটিকে গুলি করেছিল, ভাল্লুকের কোন খবরই হয়নি। অনেকটা সেই বন্দুকের গুলি ভাল্লুকের গায়ে কোন ক্ষতিই করতে পারেনি! কিন্তু পরে ভাল্লুকটি সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যায়। পয়েন্ট ব্ল্যাং রেঞ্জ থেকে শটগান ত্দিয়ে গুলি করে একটা ভাল্লুকের শরীরে কোন ধরনের দাগ পর্যন্ত ফেলতে পারেনি টেরি। এটি কেমন প্রজাতির ভাল্লুক ছিল?
শুধু এই ঘটনাই না, টেরি আর গেইন পরিবার ঐ জায়গায় নিজেদের বাড়ি করার পর থেকেই নানা রকমের UFO রিলেটেড ঘটনার সাক্ষী হয়েছে যার কোন ব্যাখ্যা নেই। ১৯৯৬ সাল থেকে আমেরিকার National Institute of Discovery Science এই জায়গাকে মনিটর করছে এবং খুজে বেড়াচ্ছে এখানে এমন কি আছে তা জানার জন্য।
১৯১৫ সালের কথা সেটা। একদিন এক প্রোসপেক্টর ও তার স্ত্রী ঘুরতে বেরিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে। হঠাৎ সেখানে তাদের নজর কাড়ে একটি পাথর। পাথরটির পেছনে অনেকটা জায়গা জুড়ে এটার চলতে থাকার ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু কোনরকম ভূমিকম্পন ছাড়া, কোন রকম বল ছাড়া কি করে শুষ্ক ঐ জায়গাটাতে এতটা জায়গায় একা একা ঘুরে বেড়ালো পাথরটা? কে জানে! অনেক রকমের তত্ত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন অনেকে। তবে প্রমাণিত হয়নি কোনটাই!
অ্যান্টার্কটিকার বরফের চাঁইয়ের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা এই রক্তপ্রপাত বাঘা বাঘা সব বিজ্ঞানীকেও ভাবিয়েছে অনেক অনেক বছর। সাদা বরফের ভেতর দিয়ে গড়িয়ে পড়া লাল রঙ এর রক্তের মতন তরল সবসময়েই এক গতিময় রহস্য হয়ে থেকেছে সবার কাছে। যদিও সবশেষ খবর অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা ধরে নিয়েছেন যে বরফের অনেক অনেক নীচে সালফার ও লোহার কোন নদী বয়ে গিয়েছে। যার রঙ সঙ্গত কারনেই লাল। আর সেটাই এই লাল রক্তের উৎস। যদিও এর কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ভারতের মধ্যেও ভূত অনেক পরিচিত। ভারতের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ভৌতিক স্থান ভানগার দূর্গ। স্থানীয় লোকজনই এই জায়গার নামকরণ করেন। এই এলাকার চারপাশে একটি প্রসস্থ বার্থ রয়েছে। এলাকাটি এবং শহরকে নিয়ে কিছু জনপ্রিয় ভূতুড়ে গল্প রয়েছে। কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদেরকে সন্ধার পর ধ্বংস হয়ে যাওয়া অবশেষ দেখতে অনুমতি প্রদান করেন না । কথিত আছে এক রাজকুমারী একজন জাদুকর থেকে ঘৃণাভরে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বলে তিনি এই এলাকাটা ধ্বংস করে দেন জাদুকরটি। ১৭০০ শতাব্দীতে এটি আবার ধ্বংস হয় আর্মিদের মাধ্যমে। এই এলাকায় যাদুকরের আত্মা এখনো থাকে বলে রাতে কোন পাখি বা কোন পশু ডাকেনা, সবাই চুপচাপ থাকে বলে কথিত আছে। আজ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি ওখানে রাত কাটানোর সাহস দেখায়নি।
রেসট্যক প্লায়া এর রহস্য সমাধান হয়েছে।এটা মোটেও রহস্যময় বা ভুতুড়ে কোন জায়গা নয়।এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে।বিজ্ঞানচিন্তা নামে একটা ম্যাগাজিনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়ছিলিখতে।